গল্পঃ মনির ভাই - লেখকঃ ফারহানা কবীর মানাল | Story: Monir Bhai - Author: Farhana Kabir Manal

#মনির ভাই
#ফারহানা কবীর মানাল
 
অফিস থেকে বের হয়ে দেখলাম আমার স্ত্রী রিপাকে আমার কলিগ মনির ভাই হেসে হেসে কিসব বলছে। আমার স্ত্রীও মুচকি হেসে তার কথার জবাব দিচ্ছে। আমি বরাবরই একটু হিংসুটে তাই আড়াল থেকে তাদের কথা শুনতে গেলাম। 
 
–" ভাবি আপনার কপালের তিলটা কিন্তু সুন্দর অনেক। আর গায়ের রং একদম সাদা গোলাপের মত। আপনার মতো সুন্দরী বউ রেগে ভাই যে কেন অফিস পড়ে থাকে বুঝি না! আমার এমন স্ত্রী থাকলে সপ্তাহে তিনদিন ছুটি নিতাম। ( মনির)
–" না ভাই আপনার ভাই আমাকে যথেষ্ট ভালোবাসে আর সময় দেয়। অফিসে ওর অনেক কাজ থাকে। ( রিপা)
 
–" কাজ আর কোথায় সারাদিন ফোন নিয়ে মুচকি মুচকি হাসে। (মনির)
–" আমি ওকে এসএমএস দিই তাই দেখেই হয়তো ( রিপা)
হঠাৎ আমাকে দেকে মনির ভাই ক্লোজআপ টুথপেষ্ট এর হাসি দিয়ে বললো ঃ- ভাই অনেক লাকি। আপনাকে ভাবি অনেক ভালোবাসে। আজ আমি আসি আপনারা কথা বলেন। ভাবি আজ আসি আবার দেখা হবে। 
 
মনির চলে আমি রিপাকে বললাম ঃ- চলো আজ বাইরে কোথাও খেয়ে আসি।
রিপা চুপচাপ ভাবে মাথা নাড়িয়ে বললো সে যাবে না। বাড়ি ফেরার পর থেকে রিপার ব্যবহারে পরিবর্তন দেখতে পেলাম৷ কথায় কথায় আমার সাথে ঝগড়া করার জন্য নাক উঁচু করে থাকে। আজ রিপা আমার জন্য অফিসে খাবার নিয়ে এসেছে। আজও মনির ভাই রিপাকে দেখে গদগদ খেতে খেতে বললো ঃ- ভাবি আপনাকে আজ গোলাপের থেকেও সুন্দর লাগছে। চাঁদও মনে হয় হার মেনে যাবে। সংসারের কাজ করতে করতে আপনার হাত শক্ত হয়ে যাচ্ছে। আমি হলে দুইটা কাজের লোক রেখে দিতাম। আপনাকে রানি করে রাখতাম। 
 
মনিরের এমন প্রসংশা শুনে রিপার গালে লাল লাল আভা ফুটে উঠেছে। আর আমার মাথার রক্ত গরম হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু মনিরকে মারলে রিপাকে ঠিক করা যাবে না৷ এমন চলতে থাকলে আমি রিপাকে হারিয়ে ফেলবো। 
 
বাসায় ফিরে রিপাকে বললাম ঃ- চলো আজ মনির ভাইয়ের বাড়ি থেকে ঘুরে আসি। মনিরের নাম শুনতেই রিপার মুখে হাসি দেখতে পেলাম। কিন্তু এ হাসি আজকের পর আর থাকবে না।
মনিরের বাড়ির কাছে যেতেই শুনতে পেলাম ঘরে থেকে কিসব ভাঙার আওয়াজ আসছে। দরজার কাছে যেতে পরিষ্কার ভাবে শুনলাম একটা মেয়ে বলছে ঃ- তোমার বাড়ির কাজ করতে করতে আমার হাতে ফোসকা পড়ে গেলো আর তুমি একটা মলমও এনে দিতে পারলে না। তোমাকে কতবার বললাম নিয়ে আসবে কথা তো কানে যায় না তোমার। সারাদিন মোবাইল নিয়ে পড়ে থাকো আমার দিকে তো কোনো নজরই নেই তোমার। 
 
আমি কিছুটা হেসে রিপার দিকে তাকালাম। মুখে একটু অবাক অবাক ভাব৷ আমি দরজার কড়া নাড়তে মনির ভাই দরজা কুলে দিলো। আমাদের দেখে অনেক অবাক হয়ে গেছে মনে হয়। আমি ক্লোজআপ হাসি দিয়ে বললাম ঃ- আপনার ভাবিকে নিয়ে বেড়াতে আসলাম। সারাদিন ঘরে থাকে বলে কথা৷ একটুতো ঘুরতে নিয়ে যেতে হয়, সময় দিতে হয় কি বলেন?
মনিরের মুখ তখন শুকিয়ে শুঁটকি মাছ হয়ে গেছে। রিপা হা করে মনিরের বউকে দেকতে ব্যস্ত। রিপা থেকে কম করে দশগুন সুন্দরী মনিরের বউ। ( আমাকে আবার খারাপ মনে কইরেন না আমার কাছে রিপাই সব থেকে সুন্দরী)
মনিরের বউ আমাদের এসে বলতে লাগলো ঃ- দেখো দেখো ভাইকে দেকে কিনছু শেখো। ভাবি কত লাকি আপনি। আর আমার কপাল দেখেন- ঠিক মতো কথাও বলে না। সারাদিন ফোন নিয়ে পড়ে থাকে মাঝেমাঝে মনে হয় সব ছেড়ে চলে যাই।
আমি বিড়বিড় করে বললাম ঃ- পরের বউকে পটাতে গেলে নিজের বউকে সময় দিবে কি করে। কথাটা আর কেউ শুনতে না পেলেও রিপা ঠিক শুনতে পেয়েছে।
মনির বললো ঃ- কিছু বললেন ভাই? 
 
আমি হেসে বললাম না ভাই আমারা আজ যাই পরে আসবো। মনির বউ আসতে দিতে না চািলেও রিপা আমাকে টানতে টানতে নিয়ে আসলো। কিছুদিন পর আমার সাথে রিপাকে দেখে মনির ভাই বললো ঃ- ভাবি আজ কিন্তু আপনাকে......
আর কিছু বলার আগে রিপা ওর হালে কসে একটা থাপ্পড় দিয়ে দিয়েছে। মনির বলূের মত আমার দিক তাকিয়ে আছে। 
 
আমি মনিরের কানে কানে বললাম ঃ- কাজ করা হাত তো ভাই তাই একটু শক্ত। আপনি একটা নাপা টেবলেট খেয়ে নিয়েন। 
 
==== অণুগল্প ===
========== 00 ============== 00 =========== 00 ============= 
দিনের বেশিরভাগ সময় কারেন্ট থাকে না। কারেন্ট গেলে বারান্দায় বসি। খালি গা, পরনে থাকে লুঙ্গি।

সামনের বিল্ডিংয়ের বারান্দায়ও এক ভদ্রলোক বসেন। মাথায় চকচকে টাক। খালি গা, পরনে লুঙ্গি। বিশাল ভুঁড়িটা ক্রমাগত হাতাতে হাতাতে ভদ্রলোক বিরস মুখে বসে থাকেন।
আমিও আমার ছোট্ট ভুঁড়ি হাতাতে থাকি। আমাদের চোখাচোখি হয়। বাইরে ঝরতে থাকে আগুন রোদ।

ইদানীং কারেন্ট থাকে না বললেই চলে। তো প্রতিদিনই আমরা বারান্দায় বসি। আমি আমার ভুঁড়ি হাতাই, তিনি তার ভুঁড়ি হাতান। এভাবেই আমাদের মধ্যে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে হৃদ্যতাপূর্ণ একটা সম্পর্ক।

আজ বারান্দায় বসে আছি। দুজনই ভুঁড়ি হাতাতে হাতাতে বাইরে রোদ দেখছি। হঠাৎ আমাদের চোখাচোখি হলো। ভদ্রলোক হাত তুলে হাই দিলেন। আমিও হাই দিলাম। ভদ্রলোকের কোলে সিগারেটের প্যাকেট। তিনি সিগারেট বের করে অফার করার ভঙ্গি করলেন। আমি হাসলাম। ইশারায় বললাম অপেক্ষা করতে। আমি উঠে ঘর থেকে সিগারেটের প্যাকেট নিয়ে আবার এসে বসলাম। দুজনে চিয়ার্স করলাম। তারপর দুজন একসাথে সিগারেটটা যেই ধরালাম, তখনই ঘটল কাণ্ডটা...

ভদ্রলোকের স্ত্রী বারান্দায় চলে এলেন। আমার দিকে তাকালের কঠিন চোখে। বাইরে আর কী গরম, তার চাইতে বেশি গরম ভদ্রমহিলার দৃষ্টি। তারপর তিনি তাকালের তার ভুঁড়িওয়ালা স্বামীর দিকে। বেচারা থতমত ভঙ্গিতে মাথা নিচু করে আছেন।
ভদ্রমহিলার এমন একটা ভাব, যেন রাধা-কৃষ্ণ হাতেনাতে ধরা পড়েছে। তিনি তার স্বামীকে কঠিন গলায় কিছু একটা বললেন, এতদূর থেকে শুনতে পেলাম না। দেখলাম ভদ্রলোক উঠে সিগারেটটা ফেলে কাচুমাচু ভঙ্গিতে ঘরে ঢুকে গেলেন।

স্বামী ভেতরে যাওয়ার পর ভদ্রমহিলা আমার দিকে কঠিন চোখে তাকালেন। এতদূর থেকেও তার চোখের ভাষা আমি স্পষ্ট পড়তে পারলাম। সেখানে লেখা—আর যদি কোনোদিন আমার স্বামীর দিকে নজর দিস, তো খবরই আছে!

আহমেদ ইশতিয়াক
=========== 00 =========== 00 =========== 00 ============== 00 ==
রাতের প্রায় বারোটার মতো বাজে। আমি সোফায় বসে বসে আম্মুর মোবাইলে ফেসবুক ঘাটাঘাটি করছিলাম, আর আপু বসে বসে তার বই পড়তেছিলো। হুট করেই কোত্থেকে যেন আম্মু ঝড়ের বেগে এসে ঝাড়ু দিয়ে কয়েকঘা লাগিয়ে দিয়ে বললো,
'এখনো মোবাইল টিপতেছিস কেন? যা তাড়াতাড়ি খাটের নিচে ঢোক।'

ভয়ে আর কোনো কথা না বলে চুপচাপ খাটের নিচে ঢুকে গেলাম। বলাই বাহুল্য, খাটের নিচে প্রচুর ধুলাবালি আর মশা। তাছাড়া অন্ধকারে কিছুই দেখতে পারছি না। আম্মু আমাকে ঝাড়ু দিয়ে পিটিয়ে এতো রাতে খাটের নিচে ঢুকতে বললো কেন সেই সাইন্স মেলাতে পারছি না।
কতক্ষণ পরে আপুকেও দেখলাম চুপচাপ আমার মতোই খাটের নিচে ঢুকে গেল। আমার সামনে এসে ফিসফিস করে বলতে লাগলো,
'বুঝেছিস আঁধার, আম্মুকে মনে হয় জ্বীনে ধরেছে! নাহলে আম্মু এতো রাতে আমাদের দুইজনকে খাটের নিচে ঢুকতে বলবে কেন?'

এমনিতেই জ্বীন-ভূত প্রচুর ভয় পাই, তারউপর আবার আপুর মুখ থেকে আম্মুকে জ্বীনে ধরার কথা শুনে প্যান্ট নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়ে গেল আমার। দুইহাত দিয়ে শক্ত করে আপুকে জড়িয়ে ধরে বললাম,

'আপু, আব্বু আজ এখনো আসছে না কেন? আম্মু তো আমাদের দুইজনকে খেয়ে ফেলবে। তখন আমার আব্বু তো বিধবা হয়ে যাবে।'
'আরে ধ্যাৎ, আম্মু আমাদের কেন খাবে? আর আব্বুই বা কেন বিধবা হয়ে যাবে?'
'না মানে, আম্মু খাবে না তো, আম্মুর মধ্যে থাকা জ্বীন আমাদের দুইজনকে খেয়ে ফেলবে! তখন তো আব্বু বিধবা হয়ে যাবে।'

'তখন আব্বু সন্তানহারা হয়ে যাবে, বিধবা হবে না। বোকা কোথাকার।'
কথার মাঝেই আম্মু আমাদের দুইজনের নাম ধরে ডেকে উঠলো। ভয়ে আমার হাত-পা রিতীমত ঠান্ডা হয়ে হয়ে গেল। আমি আপুকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। সূরা যা পারি সেগুলো আওড়ানো শুরু করলাম। আম্মু আমাদের দুইজনকে পুরো ফ্ল্যাটের কোথাও খুঁজে না পেয়ে আমাদের রুমের খাটের নিচে উঁকি দিলো। ব্যস, আমি আপুকে জড়িয়ে ধরে ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কান্না শুরু করে দিলাম ভয়ে। মনে হচ্ছে এখনই আম্মু আমাকে আর আপুকে মাছ ভাজার মতো করে খেয়ে ফেলবে।

আম্মু আমাদের দুইজনের হাত ধরে টেনে খাটের নিচে থেকে বের করে ঠাশঠাশ করে কয়েকটা লাগিয়ে দিলো। বলে রাখা ভালো, সবগুলো থাপ্পড় আমার গালেই পড়লো। আপুর গালে পড়লো না একটাও। থাপ্পড় মেরেও ক্ষান্ত হলো না আম্মু। কড়া গলায় জিজ্ঞেস করলো,
'জ্বীনে ধরেছে দুইটাকে! এতো রাতে খাটের নিচে কি মশা মারছিস দুইজন মিলে?'
আমি তো ভয়ে থরথর করে কাঁপতেছি। ভয়ে একটা টু-শব্দও করতেছি না। আপু কোনমতে বললো,

'তুমিই তো বললে খাটের নিচে ঢুকতে।'
এই কথা শুনে আম্মু আবারও আমার একটা ঠাশ করে লাগিয়ে দিলো। হ্যাঁ, আমার গালেই। তারপর হাসতে হাসতে বললো,
'বোকার দল কোথাকার! আমি বলতে চেয়েছিলাম খাটের উপর ওঠ। কিন্তু ভুলে বলে ফেলেছি খাটের নিচে ঢোক। তাই বলে কি তোরাও আমার কথা শুনে খাটের নিচে ঢুকে যাবি নাকি! আজব!'

পরাণে যেন শান্তি ফিরে পেলাম। কিন্তু একটা জিনিস বুঝলামনা, আম্মু ঝাড়ুর বাড়িও শুধু আমাকে দিলো এবং থাপ্পড়ও আমাকেই দিলো। আপুকে কেন দিলো না? এই কথা জিজ্ঞেস করতে যাবো তার আগেই আরো একটা থাপ্পড় দিয়ে বললো,
'অনেক রাত হয়েছে। এবার খাটের উপর উঠে ঘুমা।'
বলেই হাসতে হাসতে চলে গেল। আমি বোকাচন্দ্রের মতো শুধু তাকিয়ে রইলাম আপুর দিকে।

সমাপ্ত।
রম্যগল্পঃ জ্বীন
#আসাদ
=========== 00 ========= 00 =========== 00 ========== 00 ============
আমি একবার আমার অ্যাকোয়ারিয়ামের জন্য আটটা ছোট ছোট সাদা মাগুর মাছ কিনেছিলাম। ছোট অবস্থায় খুব একটা সমস্যা না করলেও মাছগুলো যখন বড় হল, তখন রাক্ষুসে মাছের স্বভাব অনুযায়ী অ্যাকোয়ারিয়ামের বাকি সব মাছগুলোকে একে একে সাবাড় করে ফেলল। এত কষ্টের টাকায় কেনা মাছগুলো খেয়ে ফেলেছে দেখে আমিও বেশ রেগে ছিলাম ওদের উপর। এমনকি রাগ করে বেশ কিছুদিন খাবার দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখি ওদের। আর ঠিক তখনই ওদের মধ্যে বেশ আশ্চর্যজনক একটি বিষয় লক্ষ্য করি আমি। আটটা মাছের মধ্যে যে মাছটি সব থেকে দুর্বল, বাকি সাতটি মাছ মিলে ওই মাছটি কে আক্রমণ করা শুরু করলো। 

প্রথমে ওর পাখনা লেজ আর কানকোতে বার বার কামড় দিয়ে দুর্বল করে ফেলল ওকে। তারপর ওর নিস্তেজ শরীরটা একটু নেতিয়ে পড়তেই বাকি মাছ গুলো এসে কামড়ে কামড়ে ওর শরীর থেকে মাংস ছিঁড়ে ছিঁড়ে নিচ্ছিল। শেষমেষ মাথার একটা বড় টুকরো বাদে খুব একটা কিছু অবশিষ্ট ছিল না ওর। সেটিও একটু পর সবথেকে বড় মাছটি একবারেই মুখে পুরে গলাধঃকরণ করে নেয়।

এইতো গেল মাছের গল্প, এবার আসুন এক পাখির গল্প শুনি। আপনার আমার সকলের চেনা জানা পঙ্খিরাজ এক ঈগলের গল্প শুনি চলুন। ডকুমেন্টারিটা দেখেছিলাম খুব সম্ভবত ডিসকভারী চ্যানেলে। একটি ঈগল পাখির তিনটে বাচ্চা ছিল। ঈগলটি যে পরিমাণ খাবার আনত, তাতে তিনটে ছানার বেশ টানাটানি হয়ে যেত। বাচ্চা তিনটির মধ্যে একটি ছিল আবার বেশ দুর্বল। বাসায় যখন মা পাখিটি থাকত না, তখন সবল বাচ্চা দুইটি দুর্বল বাচ্চাটিকে বারবার ঠোঁট আর নখ দিয়ে আঘাত করতো। এর থেকেও আশ্চর্যজনক বিষয় ছিল যখন মা পাখিটি খাবার নিয়ে এসে দুর্বল বাচ্চাটিকে আহত অবস্থায় দেখল, সে তখন তার সেই দুর্বল বাচ্চাটিকে খাবার না দিয়ে বাকি সবল বাচ্চাগুলোকেই খাবার দিত। 

এর কিছুদিন পর এমনই একদিন যখন মা পাখিটি বাসায় ছিল না, তখন সবল বাচ্চা দুটি আবার দুর্বল বাচ্চাটিকে ঠোকরাতে শুরু করে। ওদের আঘাতে আঘাতে অনাহারে থাকা ক্ষুধার্ত দুর্বল বাচ্চাটি এক সময় মারা যায়। এই ঘটনার কিছুক্ষণ পর মা পাখি অল্প কিছু খাবার নিয়ে বাসায় ফেরে। মায়ের আচরণ দেখলে বোঝাই যাচ্ছিল যে মৃত বাচ্চাটিকে নিয়ে তার খুব একটা ভ্রুক্ষেপ নেই। সে তার সবল বাচ্চা দুটিকেই খাবারগুলো খাওয়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। কিন্তু খাবার অল্প হওয়াতে খাওয়ানোর পরেও বাচ্চা দুটির খাবারের জন্য আঁ আঁ করা বন্ধ হচ্ছিল না। আর ঠিক এরপরেই পৃথিবীর সবথেকে মর্মান্তিক ঘটনাটি দেখলাম আমি। মা ঈগল পাখিটি, তার ধারালো ঠোঁট দিয়ে, মৃত বাচ্চাটির শরীর থেকে মাংস ছিঁড়ে ছিঁড়ে জীবিত বাচ্চা দুটিকে খাওয়াতে শুরু করল...

মানুষ যতই প্রবাদের লেখক হোক না কেন, আমার মনে হয় প্রকৃতিই হলো সকল প্রবাদের প্রকৃত জননী। পৃথিবীতে শক্তের ভক্ত কতজন আমি সঠিক জানিনা, তবে নরমের যম সবাই। তাতে সে আপন মা হলেও।
নরমের যম সবাই
✍️: Arif Islam
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url