#প্রণয় বর্ষণ #সিজন ২ #সূচনা পর্ব #বোরহানা আক্তার রেশমী | আদরিনী #মিথ্যা #লেখনীতেঃ অনুসা

#আদরিনী
#পর্বঃ১৪
#মিথ্যা
#লেখনীতেঃঅনুসা রাত


সমুদ্র আর তারা বাসায় ফিরেছে আজ ১৫ দিন হতে চললো।বাসায় ফেরার পরদিনই তারাকে স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছিলেন শান্ত আহমেদ আর পাশে ছিলো সবাই। জেসিও খুব খুশি হয়েছিলো নিজের স্কুলে তারাকে পেয়ে।সমুদ্রের কড়া আদেশ,জেসি যেনো তারাকে দেখে রাখে।প্রতিদিন ভার্সিটি শেষ করে তারার স্কুলের সামনে ওর জন্য অপেক্ষা করাটা অভ্যাস হয়ে গেছে সমুদ্রের। জেসির কোচিং থাকায় সে কোচিং শেষ করেই বাড়ি ফিরে। অবশ্য সমুদ্রের সাথেও দেখা হয়। তারাকে সমুদ্রের হাতে তুলে দিয়েই সে কোচিং যায়।আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি।ছুটি হওয়ার পর পরই বাইরে অপেক্ষা করতে থাকে জেসি। তারা কখন তার ক্লাস থেকে বের হবে। কিছুক্ষণ পর তারাকে আসতে দেখে মুচকি হেসে এগিয়ে গেলো।
___" তারা? তাড়াতাড়ি চলো। ভাইয়া দাড়িয়ে আছে। "

তারা মাথা নাড়ালো। ব্যাগের দুই পাশে হাত রেখে,হাঁটতে হাঁটতে বললো,
___" আজকেও তোমার কোচিং আছে?"
জেসি মুচকি হেসে জবাব দিলো,
___" হ্যা, সে তো রোজই থাকে।"
তারা একটু গম্ভীর হয়ে গেলো।ভরাট গলায় বললো,
___" আচ্ছা তোমার স্যারের নাম যেনো কি জেসিপু?"
___" সিফাত।"
___" বাট সিফাত স্যারের কোচিং তো আজ বন্ধ। "
দাঁড়িয়ে গেলো জেসি। চোখ জোড়া বড়বড় হয়ে গেলো।বিরবির করে বললো,
___" তারা কিভাবে জানলো?এখন কি হবে?"
জেসিকে বির বির করতে দেখে তারা ভ্রু কুঁচকে বললো,
___" কি বিরবির করছো জেসিপু?"
জেসি জোরপূর্বক হাসলো। তারার দিকে তাকিয়ে বললো,
___" না মানে,তুমি কোত্থেকে জানলে?তুমি তো আমার ক্লাসের নও।"
___" তুলি আমার বান্ধবী। এটা তো জানো, ওর বড় বোনও পড়ে। কথা বলতে বলতে জানলাম, সিফাত স্যার নাকি গতকালই বলেছিলেন যে পড়াবেন না।"
জেসি শুধু হালকা হাসলো। খুব বাজে ভাবে ধরা খেয়ে গেলো। তারা আবারো হাঁটতে হাঁটতে বললো,
___" তাহলে আজ বরং একসাথেই যাই।কি বলো জেসিপু?"
জেসি কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না। ঢোক গিলে আমতা আমতা করে বললো,
___" ইয়ে, মানে.."
জেসি কিছু বলার আগেই সমুদ্র ওদের সামনে চলে এলো। সানগ্লাস খুলতে খুলতে দুজনকে উদ্দেশ্য করে বললো,
___" তোমরা এতো আস্তে আস্তে আসছো কেনো? আমি কখন থেকে ওয়েট করছি?"
জেসি তাড়াহুড়ো করে বলতে লাগলো,
___" ভাইয়া আমার কোচিং আছে। বায়।"
বলেই দ্রুত স্থান ত্যাগ করলো জেসি। তারা পিছন থেকে দু একবার ডাকিও দিলো,
___" জেসিপু। কই যাও? আরে!"
বলতে বলতে কিছুটা এগিয়ে গাড়ির কাছে চলে এলো। হঠাৎ সমুদ্র পিছন থেকে কাঁধে হাত রেখে বললো,
___" ও তো কোচিং এ গেছে। কি হয়েছে তারা? বলো আমায়!"
তারা সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে রইলো।উপরের ঠোঁট দ্বারা নিচের ঠোঁটটা চেপে ধরে ভ্রু কুঁচকে বললো,
___" আমি আসলে একটা বিষয় নিয়ে কনফিউজড। "
___" কোন বিষয়?"(ভ্রু কুঁচকে)
তারা কিছু বলতে গিয়েও বললো না। মনে মনে ভাবলো,
___" এসব বললে যদি জেসিপুকে বকা দেয় তো?"
তারাকে চুপ করে থাকতে দেখে সমুদ্র বলে উঠলো,
___" কি হলো! চুপ কেনো! বলোহহ!"
তারা কেঁপে ওঠে জোরপূর্বক হাসলো। তারপর গাড়ির দরজা খুলতে খুলতে বললো,
___" না, কিছু না।"
বলেই গাড়িতে বসে পড়লো তারা। সমুদ্র সেখানে দাঁড়িয়েই ভাবতে লাগলো,
___" এই বলছিলো কনফিউজড, এই বলে কিছু না। স্ট্রেন্জ!!!"
তারা গাড়ির ভিতর থেকেই সমুদ্র কে উদ্দেশ্য করে ডাকতে লাগলো,
___" আরে! কখন আসবেন?"
___"আসছি।"
বলেই সানগ্লাসটা পড়ে সিটে বসে পড়লো সমুদ্র। তারার দিকে তাকিয়ে দেখলো,তারা নিচের দিকে তাকিয়ে কি যেনো ভাবছে। সমুদ্র ভাবতে লাগলো,
___" কি এমন ঘটলো যেটা তারাকে এতোটা চিন্তিত করে দিলো? তারা তো চুপচাপ থাকার মেয়ে নয়।প্রতিদিন তো অনেক গল্প করে।"
এসব ভাবতে ভাবতেই বাসার সামনে গাড়ি থামালো সমুদ্র।তারা কিছু না বলে তাড়াহুড়ো করে গাড়ি থেকে বের হয়ে ঘরে চলে গেলো।বিষয়টা যেনো আরো ভাবিয়ে তুললো সমুদ্রকে। অবাক হয়ে বির বির করলো,
___" তারা তো প্রতিদিন আমার সাথে বাসায় ঢুকে। তবে আজ কেনো নিজে নিজে চলে গেলো? কি হয়েছে আমার আদরিনীর?"
------ - --

নিজের ঘরের বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে তারা।মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে বিভিন্ন চিন্তা। তার ছোট্ট মাথায় কিছুতেই জেসির মিথ্যা বলার কারণটা ধরা পড়ছে না। সে এমন মিথ্যায় নতুন। কখনো কাউকে বলতে দেখেনি। তারা ফুলগুলো দেখতে দেখতে বলে উঠলো,
___" কেনো মিথ্যা বললো সে?"
সাথে সাথে পিছন থেকে কেউ গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠলো,
___" কে মিথ্যা বলেছে তারা?"
কেঁপে উঠলো তারা।এই কন্ঠটা পরিচিত তার। এটা তো সমুদ্র! তারা পিছনে না ফিরেই বললো,
___" কিছু না মিঃ আহমেদ।"
সমুদ্র তারার কাঁধে হাত রেখে বললো,
___" জানি আমি। তুমি জাহানারা বেগমের জন্য কষ্ট পাচ্ছো?"
কথাটা বলার সাথে সাথে পিছনে ফিরে সমুদ্র কে জড়িয়ে ধরলো তারা। বুকে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে রইলো। সমুদ্র তারার পিঠে হাত রেখে বললো,
___" কি হয়েছে তারা?বলো আমায়! আমি না তোমার বন্ধু? তোমার মিঃ আহমেদ! "
তারা সমুদ্রের বুকে মুখ গুঁজেই ঠোঁট উল্টে বললো,
___" আপনার কাছে তো সবকিছুর উত্তর আছে। তাই না মিঃ আহমেদ? "
সমুদ্র মুচকি হাসলো। তারার মাথাটা তুলে গালে হাত রেখে বললো,
___" হ্যা আছে তো মিসেস তারা আহমেদ। "
তারা আবারো সমুদ্রের বুকে মুখ গুঁজে বললো,
___ "জেসি আপু কেনো মিথ্যা বললো?এর উত্তর আছে?"
সমুদ্রের ভ্রু কুঁচকে গেলো। তারাকে দোলনায় বসিয়ে নিজে নিচে বসে পড়লো। হাত ধরে বললো,
___" জেসি কি মিথ্যা বললো?"
তারা অসহায় গলায় বললো,
___" আপনি জেসিপুকে বকবেন না তো?"
___" আচ্ছা বকবো না। বলো! কি মিথ্যা বলেছে?"
তারা সমুদ্রকে জেসির কথাগুলো খুলে বললো। সব শুনে সমুদ্র ভ্রু কুঁচকে ভাবতে লাগলো,
___" তোমার অবুঝ মন তো মিথ্যার কারণটা ধরতে পারবে না আদরিনী। আমি হয়তো বুঝতে পারছি যে জেসি কেনো মিথ্যা বলেছে। নিশ্চয়ই কোনো ছেলের সাথে দেখা করতে গেছে ও। তাছাড়া ওইদিন আমার বন্ধু পিয়াসও তো ওকে টকটা ছেলের সাথে দেখেছিলো। তখন সন্দেহ হলেও এখন সেটা বিশ্বাস হলো।"
সমুদ্রকে কিছু ভাবতে দেখে তারা ঠোঁট উল্টে বললো,
___" কি হলো? বলুন না! কেনো মিথ্যা বললো?"
সমুদ্র মিথ্যা হাসলো।তারার মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,
___" পাগলী, হয়তো কোনো বান্ধবীর সাথে দেখা করতে গেছে আর আমাকে বললে তো রাগ করবো। তাই বলেনি।"
___" কিন্তু বান্ধবীর সাথে তো স্কুলে দেকা হলোই। "
সমুদ্র হেসে বললো,
___" ইশশ! কত্ত প্রশ্ন করে আমার তারাটা। এখন আর এতোকিছু বলতে হবে না। চলো ঘুমাবে। বিকাল হয়ে গেছে।একটু ঘুমাবে চলো। "
বলেই তারার হাত ধরে বিছানায় জোর করে শুইয়ে দিলো সমুদ্র। চুলগুলো খুলে দিয়ে বললো,
___"চুলগুলো শুকাতে দাও।"
তারা মাথা নাড়ালো। শুকানোর কথাটা তো বাহানা মাত্র। বাস্তব তো এটাই যে,সমুদ্র তারার চুলগুলো মন ভরে দেখতে চায়। এই ভেজা চুলের মোহতে ঢুবতে চায়।তারার ঘুমানোর অপেক্ষা শুধু! সমুদ্র তারার পাশে বসে তারার মাথাটা কোলে তুলে নিলো। মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,
___" ঘুমাও তো।"
তারা হালকা হেসে চোখ বুঝলো ঠিকই।কিন্তু মনের মধ্যে একটা অজানা প্রশ্ন থেকেই গেলো। সমুদ্র নিজের মন মতো তারার মাথায় হাত বুলিয়ে চুলগুলো ছুঁয়ে দেখছে। তারা এখনো ঘুমায়নি। বুঝতে পেরে সমুদ্র বললো,
___" ঘুমাও না কেনো বউ?,
তারা চোখ খুলে ফেললো। হালকা হেসে বললো,
___" আসছে না।"
সমুদ্র মুচকি হাসলো। তারার চুলগুলো ছুঁয়ে বললো,
___" আচ্ছা তারা, তোমার চুলগুলো এতো নরম কেনো?"
___" মা যত্ন নিতো।মাঝপথে তো এতো যত্ন নেওয়া হয়নি। এখানে আসার পর আপনি যত্ন নিতে শিখালেন। তাই আরো সুন্দর হয়ে গেলো। "
সমুদ্র ব্লাশিং হয়ে মাথা চুলকালো। নিচু হয়ে তারার কপালে চুম্বন এঁকে বললো,
___" ঘুমাও তো পাগলী।"
.
.
মাগরিবের নামাজ পড়ে বাসায় ঢুকতেই জেসিকে ড্রইংরুমে বসে টিভির সামনে বসে থাকতে দেখলো সমুদ্র। পাশেই তারা বসে আছে। সমুদ্র এগিয়ে গিয়ে বসে পড়লো জেসির পাশে। মুচকি হেসে বললো,
___" কিরে! দিন কেমন গেলো?"
___" ভালোই তো ভাইয়া।"
___" ক্লাস কেমন করলি?"
সমুদ্রের এমন কথা শুনে তারা সমুদ্রের মুখপানে তাকালো। সমুদ্র জানার পরও এই প্রশ্ন কেনো করলো? কিন্তু জেসির উত্তরের জন্য কেউই প্রস্তুত ছিলো না। জেসি ভাবলেশহীন ভাবে জবাব দিলো,
___" ক্লাস তো হয়নি ভাইয়া।"
সমুদ্র তারার দিকে তাকালো। আর তারাও। একে-অপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করে সমুদ্র বললো,
___" তাহলে তুই কই ছিলি?"
জেসি টিভি অফ করে বললো,
___" একটা বান্ধবীর বাসায়। এসাইনমেন্ট নিয়া কথা বলতে।"
সমুদ্র ভ্রু কুঁচকে বললো,
___" কেমন এসাইনমেন্ট? "
___" বিস্তারিত জানতে হলে চলো স্টাডি রুমে।"
সমুদ্র আবারো তারার দিকে তাকালো। তারা তখন কৌতুহল নিয়ে জেসির দিকে তাকিয়ে। সমুদ্র জেসিকে একটু বয় পাওয়াতে বললো,
___" তোর ওই বান্ধবীর নাম্বার দে তো।"
___" নাও। নোট করো!"
সমুদ্র যেনো এবার চরম অবাক।জেসির উপর থেকে সন্দেহটা সরে গেলো। তবে কি জেসির কোনো দোষ নেই? শুধু শুধু সন্দেহ করলো? তারাও দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবলো,
___" ওহ! তারমানে এইজন্যই মিথ্যা বলেছিলো?"
জেসি উঠে দাঁড়ালো। পা বাড়ালো নিজের রুমের দিকে। সমুদ্র তারাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো,
___" রুমে আসো।"
.
..
চলবে.........

(ভুলক্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন। গঠণমূলক মন্তব্য আশা করছি)
(অনেক হলো ছোট তারা। এবার বরং তারাকে বড় করে দিই?

 

As per their suggestions - made along with UNICEF - youngsters should begin breastfeeding inside an hour of being conceived and be only breast fed for a half year, proceeding to be breastfed on request then, at that point, from a half year forward, should start eating protected and sufficient food sources, while proceeding to take their mother's milk.

Floated by her discoveries, Natasha turned into a promoter for regular stage weaning, saying: 'There's a platitude locally - 'Don't offer and don't decline.

Incorporating that with my young ladies truly intended that, while I wasn't putting them down as expected, offering them my milk, I wasn't saying no assuming they inquired.

Breastfeeding Ellie considering no set cutoff time of when to stop, when Grace showed up two years after the fact, she breast fed them - one at each bosom - together.
I couple took care of for a long time,' she said.


I was somewhat fearful at first with regards to the items of common sense, all things considered, however you track down your own notch, and it gets simpler the more you make it happen.
As Ellie was somewhat more seasoned by then, at that point, I could disclose to her to be patient and allowed Grace to hook on and get comfortable first.

Each and every evening, they would nod off no matter what, one on each bosom, clasping hands.'

While Ellie quit needing to breastfeed not long before she turned five, Grace keeps on nursing once toward the beginning of the day and once in the evening.

Yet, Natasha actually manages cynicism, which she faults on individuals' misinformation, rather than on purposeful dreadfulness.

Individuals see breastfeeding as fair game - something everybody is permitted to have an assessment on and scrutinize,' she said. 'I never would, as it is each mum's decision, however I know whether I offered something about bottle taking care of, it would be inadmissible.

 I have gotten a few troublesome remarks throughout the long term. At the point when Grace was only eight months old, I had someone tell me that I should be forcibly feeding her into weaning by that point. I recently thought, 'What might you say on the off chance that you realized I'm likewise taking care of her more established sister?

I additionally get bunches of individuals commenting that I'm 'actually' taking care of - with accentuation on the still.

However, i don't think individuals are intentionally attempting to disgrace me, or be underhanded. It's an absence of schooling - even inside the clinical calling.

We have lactation trained professionals, however very few of them, and most specialists and medical caretakers aren't equipped with tons of weaponry with a similar degree of data. That is the manner by which you end up with mums like I used to be, who don't understand you can take care of recent year, or believe it's inappropriate to.'

By sharing her story, Natasha, who says that her better half Adam is her greatest team promoter and is completely steady, desires to standardize breastfeeding and console different mums that they don't need to stop before they are prepared.

Additionally mindful that a few mums can't bosom feed, she needs to urge them to observe their nearby milk banks, where ladies can give their own abundance supply.

Previously, she has given six liters, which proceeded to help 22 unique untimely children, too giving a reserve to certain mums she met through Facebook, who couldn't nurture themselves as they were having chemotherapy, yet didn't have any desire to give their infants recipe.

It's up to each mum as a singular how they need to treat, I comprehend that some have attempted and attempted, yet basically can't breastfeed,' she clarified.

Due to the consistent progression of oxytocin - known as the adoration chemical - breastfeeding is an incredible mind-set supporter. I had post birth anxiety with Stephen and Ellie, so thought it'd be written in stone that I would with Grace, however I didn't.

Before you say something, teach yourself. Assuming a mum at any point makes reference to something to me that I don't comprehend, I will keep my mouth shut, then, at that point, disappear and find it. Whether or not I concur is neither her nor there. It's schooling that is significant.

রেস্টুরেন্টে খাবারের অর্ডার নিতে গিয়ে নিজের প্রাক্তনের সামনে পড়ে যাওয়ার মতো অস্বস্তিকর একটা পরিবেশে ফেঁসে গেছে স্পর্শী। বার বার দৃষ্টি এদিক ওদিক করে জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নেয়। কোনো রকমে বলে,
'স্যার আপনার অর্ডার!'
নিয়ন তখনো হা করে তাকিয়ে আছে স্পর্শীর মুখের দিকে। বার বার পা থেকে মাথা পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করছে। নিজের চোখকে নিজের কাছেই অবিশ্বাস্য মনে হলো তার। স্পর্শী যখন গলা পরিষ্কার করে ২য় বারের মতো একই প্রশ্ন করে তখন নিয়নের ঘোর কাটে। কয়েক সেকেন্ড চুপ করে থেকে হু হা করে হেঁসে ওঠে। স্পর্শীসহ নিয়নের ২ বন্ধু চমকে ওঠে। নিয়ন হাসতে হাসতেই বলে,
'বড়লোকের একমাত্র মেয়ের এ কি হাল! বাবা কি বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে নাকি জানেমান? আমাকে তো খুব ভাব দেখিয়ে ব্রেকআপ করে দিলে তা এখন বুঝি রেস্টুরেন্টে কাজ করা হয়!'
নিয়ন তখনো হাসছে। স্পর্শীর মাথায় দপদপ করে আগুন জ্ব'লে ওঠে। ইচ্ছে করে নিয়নকে তুলে বাহিরে নিয়ে ফে'লে দিতে। কিন্তু নিজের ইচ্ছা নিজের মনে গিলে নিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলে,
'এটা আমার কাজের জায়গা আপনার বাড়ি নাহ। কি খাবেন অর্ডার করেন! নয়তো নিজের রাস্তা মাপেন!'
নিয়ন জ্ব'লে ওঠে। স্পর্শীর দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে ম্যানেজারকে ডাকে। ম্যানেজার ছুটে আসলে নিয়ন রাাগী কন্ঠে বলে, 'কি সব ওয়েটার রাখেন! কাস্টমারকে অ'পমান করে আবার বলে বের হয়ে যেতে! আপনাদের রেস্টুরেন্টে আসাই ভুল।'
ম্যানেজার স্পর্শীর দিকে কটমট করে তাকিয়ে নিয়নের সাথে বিনয়ের ভাষায় কথা বলে, 'সরি স্যার। আপনি প্লিজ রাগ করবেন নাহ। আর এমন হবে নাহ। স্পর্শী সরি বলো!'
'কিন্তু স্যার...'
'সরি বলতে বলছি তোমাকে!'
স্পর্শী ম্যানেজারের কথার ওপর কিছু বলতে পারে নাহ। অ'গ্নি দৃষ্টিতে নিয়নের দিকে তাকিয়ে চোয়াল শক্ত করে বলে, 'সরি স্যার।'
নিয়ন বিজয়ের হাসি হাসে। সাথে অর্ডার দিয়ে দেয়। স্পর্শী মনে মনে কতগুলো বকা দিয়ে চলে যেতে নিলে পেছনের টেবিল থেকে একজন তাকে উদ্দেশ্য করে ডাকে,
'এক্সকিউজ মি মিস!'
স্পর্শী ঘুরে তাকালে ছেলেটা তাকে হাতের ঈশারায় ডাকে। স্পর্শী কাছে গিয়ে ভদ্র ভাবে বলে, 'হাউ ক্যান আই হেল্প ইউ স্যার?'
'আই লাভ ইউ।'
স্পর্শী যেনো আকাশ থেকে পড়ে। মুখটা হা হয়ে যায় অটোমেটিক। সামনে বসা ছেলেটা স্বাভাবিক। কিছুই হয়নি এমন ভাব নিয়ে বসে আছে। অথচ এক বাক্যে তিনি কি রকম আশ্চর্য ঘটনা ঘটিয়েছে তা শুধু স্পর্শী না নিয়নসহ তার ২ বন্ধু এবং ছেলেটার সাথে থাকা আরো দুজন লোকও বুঝেছে। সবার মুখই আকস্মিকতায় হা হয়ে গেছে। ছেলেটার সাথে থাকা দুজনকে হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে ছেলেটা বলে,
'মুখ বন্ধ কর নাহলে মশা ঢুকে যাবে।'
সাথে সাথেই হারুণ আর রিফাত মুখ বন্ধ করে নেয়। স্পর্শীও নড়ে চড়ে দাঁড়ায়। মনে করে হয়তো ভুল শুনেছে। তার কিছু বলার আগেই রিফাত দাঁত বের করে বলে,
'বস! আমরা মনে হয় কিছু ভুল শুনছি! আপনি মনে হয় 'লেবু আছে কি না এইডা জিগাইছেন তাই না?'
হারুণ ঠা'স করে একটা বসিয়ে দেয় রিফাতের মাথায়। কটমট করে বলে, 'বসরে তুই কি মনে করস হা'রা'মি? আমাগো বস সামান্য এইডা জিগাইবো! অসম্ভব। বস মনে হয় আলাদিনের জ্বিনের কথা জিগাইছে! তাই না বস?'
রুদ্র ভ্রু কুঁচকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো হারুণ আর রিফাতের দিকে। স্পর্শী এদের কথায় বুঝে গেছে এরা কি পরিমাণে বস ভক্ত! নিজের উপস্থিতি বোঝাতে গলা পরিষ্কার করে। রুদ্র রিফাত আর হারুণের দিকে তাকিয়ে গম্ভীর স্বরে বলে,
'তোরা চুপ করে থাকবি নাকি মুখে কস্টেপ মে'রে দিবো?'
দুজনে চুপ হয়ে যায়। স্পর্শী ভাবে চলে যাবে নাকি দাঁড়াবে! রুদ্রর দিকে ভালো মতো তাকায়। ছেলেটা সুদর্শন বটে। যথেষ্ট সুদর্শন। মেয়েরা প্রেমে পড়ে যাবে এমনই একটা ছেলে। চুল গুলো বেশি বড়ও নাহ বেশি ছোটও না, মুখে চাপ দাড়ি সেটে আছে। গায়ের রঙটা উজ্জ্বল শ্যাম। এক হাতে কি সব কি সব ব্যাচ পড়া আরেক হাতে ঘড়ি পড়া। গলায় একটা বড় চেইনের সাথে ছু'ড়ি টাইপের কি যেনো লাগানো! সাদা টি শার্টের ওপর কালো শার্ট পড়া। শার্টের বোতাম সবগুলোই খুলে রাখা। স্পর্শী পা থেকে মাথা পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে বিড়বিড় করে বলে,
'বেশভূষা তো পুরাই গু'ন্ডাদের মতো। আমার জন্য এটাই ভালো হবে যে এখান থেকে ভাগি। নয়তো এই গু'ন্ডাটা যদি সত্যি সত্যিই আবার ওই গোল্ডেন ওয়ার্ড বলে! আসতাগফিরুল্লাহ। ভাগ স্পর্শী!'
পেছনে ঘুরতে নিলেই রুদ্র ফের বলে, 'মিস পর্শী! আই লাভ ইউ।'
স্পর্শী এবার স্পষ্ট শুনে। চোখ বড় বড় করে বলে, 'পা'গল নাকি! চিনেন না জানেন না আইসা একটা মেয়েকে আই লাভ ইউ...'
সাথে সাথেই স্পর্শীকে থামিয়ে রুদ্র উঠে দাঁড়ায়। ঠোঁটের সাথে হাত না লাগিয়েই চুপ করতে বলে নিজের মাথাটা খানিকটা এগিয়ে আনে। সুন্দর করে বলে, 'আই লাভ ইউ টু।'
স্পর্শী বোকা বনে যায়। রিফাত আর হারুণ হেঁসে ফেলে শব্দ করে। রুদ্র ঠোঁট কামড়ে হাসে। নিয়ন এতক্ষণ চুপচাপ বসে সবটা দেখলেও এবার আর বসে থাকে নাহ। তার সামনেই স্পর্শীকে কেউ প্রপোজ করছে বিষয়টা তার হজম হইলো নাহ। রাগে, জিদ্দে এগিয়ে আসে রুদ্রর কাছে৷ স্পর্শীর হাত টেনে রুদ্রর সামনে থেকে সরায়। রুদ্র তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকায় স্পর্শীর হাতের দিকে। নিয়নের ২ বন্ধুও এগিয়ে আসে। রুদ্রর দিকে আঙুল তুলে নিয়ন বলে,
'কিরে! তোর এতো সাহস যে আমার সামনে দাঁড়িয়ে আমারই গার্লফ্রেন্ডেররে প্রপোজ করিস! এই শাকিব, স্বপন! শা'লা গুলারে ধর তো।'
রুদ্র চোখ মুখ বিশাল ভাবে কুঁচকায়। স্পর্শী এই আকস্মিক ঝা'মেলায় ফেঁসে গিয়ে কিছু বলার মতো ভাষাই হারিয়ে ফেলেছে। কি বলবে, কি করবে কিছুই বুঝে আসে নাহ। চোখ পিটপিট করে শুধু দেখতে থাকে। শাকিব, স্বপন এগোতে নিলে হারুণ আর রিফাত পকেট থেকে পি'স্ত'ল বের করে সরাসরি দুজনের মাথায় ঠ্যাকায়। দুজনেই ভয়ে, আতঙ্কে পিছিয়ে যায়। রিফাত বলে,
'কলিজা কত্তো তোদের! বসরে মা'রার জন্য আগাইয়া আসছোস! দিমু মা'থাডা উ'ড়াইয়া!'
রুদ্রর দৃষ্টি তখনো নিয়নের হাতের মুঠোয় থাকা স্পর্শীর হাতের দিকে। বিড়বিড় করে বার কয়েক উচ্চারণ করেছে, 'গার্লফ্রেন্ড!' কিন্তু জোড়ে বা নিয়নকে কিছুই বলেনি। রিফাত আর হারুণের কাছে পি'স্ত'ল দেখে নিয়নও ভয় পায়। হাতের মুঠোতে রাখা স্পর্শীর হাত ছেড়ে দেয়। বলা বাহুল্য জীবনে প্রথমবারের মতো এরকম একটা ঘটনায় পড়ে স্পর্শী যথেষ্ট ভয় পেয়ে গেছে। হাত ছাড়া পেতেই ছুটে চলে যায় অন্যদিকে। রুদ্র এক পলক সেদিকে তাকিয়ে হারুণ আর রিফাতের দিকে তাকায়। চোখের ঈশারায় কিছু বলতেই দুজনেই পি'স্ত'ল সরায়। রুদ্র নিয়নের শার্টের কলার টেনে ধুলো ঝাড়ার মতো করে ঝেড়ে দেয়। শান্ত গলায় বলে,
'গার্লফ্রেন্ড গার্লফ্রেন্ড করলি যে! তোদের মধ্যে তো কোনো কিছুই দেখলাম নাহ। যতটুকু বুঝলাম আগে কিছু থাকলেও তা এখন আর নেই। তো ভদ্রলোকের মতো পর্শীর থেকে দুরে থাক। নয়তো পরের বার তুই থাকবি নাহ।'
---
বিকেলের পর আর রুদ্র বা নিয়ন কাউকেই চোখে পড়েনি স্পর্শীর। তবে বিকেলের সেই ঘটনায় যথেষ্ট ভয় পেয়েছে সে। বিশেষ করে পি'স্ত'ল দেখে। সন্ধ্যা থেকেই রেস্টুরেন্টে একটা জম্পেশ আড্ডা চলছে। স্পর্শীর বন্ধু এরা সবাই। সাফিন, সামিরা, তানিয়া, নাহিদ, নীরব। স্পর্শীকে মিলিয়ে এরা মোট ৬ জন। স্পর্শীর কাজ শেষ হতে হতে প্রায়ই ৯ টা বেজে যায়। পার্টটাইম জব তার। রেস্টুরেন্টটা সাফিন আর সামিরার মামার। তাদের সুপারিশেই স্পর্শীর জব এখানে। অতো রাতে স্পর্শী একা বাড়ি ফিরবে এটা কেউই মেনে নেয়নি। তাই প্রতিদিন ঠিক মাগরিবের আযানের পর সবাই আসে। যার যার পড়ার দরকার প্রয়োজনে বই সঙ্গে নিয়ে আসে। তবুও কেউ প্রতিদিন এই সময়ে হাজির হতে কার্পন্য করে নাহ। স্পর্শী একবার কোণার টেবিলে নিজের বন্ধুদের দিকে তাকিয়ে নিজের কাজে মন দেয়। কাজ শেষের মাঝে প্রায়। তাই সব গুছিয়ে নিয়ে নিজের ড্রেস পাল্টে সবার কাছে আসে। সাাফিন স্পর্শীকে আসতে দেখেই বলে,
'মহারাণী ভিক্টোরিয়া আজ নাকি রেস্টুরেন্টে কিসের ঝা'মেলা হয়ছে!'
সবাই ভ্রু কুঁচকে তাকায়। স্পর্শী নিজেও কপাল কুঁচকে বলে, 'তোরে কে বললো?'
সাফিন ভাব নিয়ে বলে, 'কে আবার? আমার গার্লফ্রেন্ড আছে না এখানে! সে বলেছে।'
সামিরা সাথে সাথেই সাফিনের পিঠে কি'ল বসিয়ে দিয়ে বলে, 'যেখানেই যাই সেখানেই তোর গার্লফ্রেন্ড কোথা থেকে আসে!'
সাফিন ব্যাথায় চোখ মুখ কুঁচকে বলে, 'কথায় কথায় মা'রোস ক্যান খা'টাশ! তুই তোর ডা'ইনীর মতো ফেইস নিয়ে প্রেম করতে পারোস না বইলা কি আমিও প্রেম করমু না? আমি এতোই হ্যান্ডসাম যে মেয়ে দেখে সেই মেয়েই আমার প্রেমে পড়ে যায়। তাই সব জায়গাতেই আমার গার্লফ্রেন্ড বিরাজমান।'
সাফিন ভাব নিয়ে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে। বাকি সবাই চোখ মুখ কুঁচকে তার দিকে তাকিয়ে আছে। সামিরা ৩২ টা দাঁত বের করে বলে, 'এতো ভাব নেওয়ার কিচ্ছু নেই ভাইজান। মনে রাইখো তুমি আমার জমজ ভাই। সো আমার ফেইস ডা'ইনীর মতো হইলে তোমারটাও কোনো রা'ক্ষসের থেকে কম না।'
সবাই ফিক করে হেঁসে দেয়। সাফিনের মুখটা ফা'টা বেলুনের মতো হয়ে যায়। হাত বগলদাবা করে গাল ফুলায়। স্পর্শী ব্যাগ নিয়ে বলে, 'বের হতে হবে রে। লেট হচ্ছে। বাসায় স্পর্শ আর রেণু আপা একা। স্পর্শ টা খালি আমাকে খোঁজে। চল! কাল ভার্সিটিতে গিয়ে আড্ডা দেবো।'
সবাই মাথা নাড়ায়। রেস্টুরেন্ট থেকে বের হতেই তানিয়া স্পর্শীকে চেপে ধরে কি হয়েছে তা বলার জন্য। স্পর্শী এক এক করে সব বলে। সব শুনে সবাই যেমন হাসাহাসি করে তেমন স্পর্শীকে সাবধানও করে। সাফিন বার বার বলে দেয় রুদ্রকে রেস্টুরেন্টে দেখলেই যেনো তাকে কল করে। স্পর্শী হাসে। সবার উৎকন্ঠা দেখে চেয়ে চেয়ে। এটাই তার পরিবার। পুরো রাস্তা ৫ জনে হৈ হুল্লোড় করতে করতে আসে। তানিয়া ফাজলামি করে বলে,
'একটা জিনিস ভালোই হয়ছে বুঝছিস! একটা গু'ন্ডা দুলাভাই পাওয়া গেলো। আহা কেউ কিছু বললেই দুলাভাাইরে দিয়া নাক ফা'টাইয়া নিমু। সুন্দর না দোস্ত?'
তানিয়ার কথা শেষ হতে না হতেই সামিরা ব্যস্ত কন্ঠে বলে, 'দোস্ত শোন! গু'ন্ডাটা সুন্দর না? মানে তুই তো প্রেম ট্রেম করবি নাহ। তা আমার অনেক দিনের শখ একটা গু'ন্ডার গলা ঝুলে যাবো।'
সাফিন খোঁ'চা মে'রে বলে, 'তোর মতো শা'ক'চু'ন্নিরে গু'ন্ডা ভাইও ভয় পাবে।'
সবাই হাসাহাসি শুরু করে। স্পর্শীর বিল্ডিং এর সামনে আসতেই সবার থেকে বিদায় নিয়ে সে ঢুকে যায় ভেতরে। স্পর্শীর বিল্ডিং এর পরেই ধীরে ধীরে সবার বিল্ডিং পড়ে। সাফিন, সামিরা, নাহিদ, নীরবের নিজস্ব ফ্ল্যাট হলেও স্পর্শী আর তানিয়ারা ভাড়া থাকে দুটো বিল্ডিং এ। স্পর্শী ৩ তালার ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকে। এখানে এসেছে কেবলই ১ সপ্তাহের মতো। আগে অন্য জায়গায় থাকতো। সেখান থেকে রেস্টুরেন্ট আর ভার্সিটি দুর হওয়ায় এখানে শিফ্ট হয়েছে। ক্লান্ত শরীরে এলোমেলো পা ফেলে ফ্ল্যাটের সামনে এসে কলিং দিতেই রেণু আপা দরজা খুলে দেয়। রেণু আপার দিকে তাকিয়ে স্পর্শী খানিকটা হাসে। স্পর্শী ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে বলে,
'স্পর্শ কোথায় আপা?'
'সে তো ঘুমাইয়া গেছে আপা। আপনি বসেন!'
রেণু রান্নাঘরে ছোটে পানির জন্য। স্পর্শী সোফায় হেলান দিয়ে বসে। রেণু আপা পানি দিলে তা পান করে আস্তে ধীরে বলে, 'স্পর্শ খেয়েছে? তুমি খেয়েছো?'
'স্পর্শ খায়ছে আপা। আমি তোমার লগে খামু। হাত মুখ ধুইয়া আসো যাও!'
স্পর্শী ক্লান্ত ভঙ্গিতে মাথা নাড়িয়ে ঘরে যায়। বিছানায় ঘুমন্ত স্পর্শকে দেখে আগে ওয়াশরুমে ঢোকে। হাত মুখ ধুয়ে এসে ঘুমন্ত স্পর্শকে আদর করে দেয়। তারপর রেণু আপার সাথে খেয়ে নেয়। ঘরে আসার আগে রেণু আপা বলে,
'আপা বাজার তো সব শেষ। কালকা কি রানমু?'
স্পর্শী দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে, 'সকালের জন্য হবে না?'
'হ্যাঁ হবে।'
'আচ্ছা চালিয়ে নেও! আমি কাল বাজার করে নিয়ে আসবোনি।'
রেণু আপা মাথা নাড়ায়। স্পর্শী ঘরে এসে একবার স্পর্শকে দেখে বারান্দায় দাঁড়ায়। চোখ বন্ধ করে বাহিরের বাতাস শুষে নেয়। ভীষণ করে মায়ের কোলে মাথা রাখতে ইচ্ছে করে। ঠোঁট কামড়ে নিজের কান্না আটকায়। চোখ মেলে সামনে তাকাতেই চমকে ওঠে। দুরে একটা অবয়ব দাঁড়িয়ে আছে। দুর থেকে মনে হচ্ছে তার দিকেই তাকিয়ে আছে। স্পর্শীর দৃষ্টি অস্থির হলো। চোখ পিটপিট করে বোঝার চেষ্টা করে ওটা কে! আনমনেই বিড়বিড় করে বলে,
'রেস্টুরেন্টে আসা ওই গু'ন্ডাটা না!'

#প্রণয়_বর্ষণ
#সিজন_২
#সূচনা_পর্ব
#বোরহানা_আক্তার_রেশমী

চলবে..

(আসসালামু আলাইকুম। ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। যেহেতু আমার এক্সাম চলে তাই গল্প সেভাবে লিখতে পারছি নাহ। কাল চৈত্রিকার শেষ পর্ব দেওয়ার চেষ্টা করবো৷ এই গল্পের পর্ব লিখায় ছিলো আর প্লটটাও ভাবা ছিলো। তাই ভাবলাম পোষ্ট করে দেই। প্রথমেই বলে দেই গল্পটা নিয়মিত পাবেন নাহ। l)

আপনি যদি একজন সার্বক্ষণিক গৃহিণী স্ত্রী চান তাহলে আপনার উচিৎ না বুয়েট কুয়েট মেডিক্যাল বা স্বনামধন্য কোন ভার্সিটি পড়ুয়া এক জন ছাত্রীকে কিংবা এসব জায়গা থেকে গ্রাজুয়েট ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠানো। কারণ প্রতিনিয়ত পড়াশোনা-প্রজেক্ট-ইন্টার্নীর চাপে সাংসারিক অনেক জ্ঞান ই তাদের না থাকাই স্বাভাবিক।এতে দোষের কিছু দেখিনা।
হ্যাঁ আপনি চাইতেই পারেন আপনি যখন ঘরে ফিরবেন আপনার স্ত্রী সেজেগুজে মোমবাতি জ্বালিয়ে পঞ্চ ব্যঞ্জন সাজিয়ে আপনার অপেক্ষায় থাকবে। অনেক মেয়ের ই প্যাশন থাকে ঘরকন্না করা। স্বামী-সন্তান-শ্বশুড় বাড়ি নিয়ে জগত সাজানো।এতেও লজ্জার বা তুচ্ছ করার কিছু দেখিনা আমি। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার,ইকোনোমিস্ট,ফার্মাসিস্ট ইত্যাদি হবার চেয়ে পার্ফেক্ট গৃহীনী হওয়া কম কস্টের বা কম সাধনার নয়।

কিন্তু আপনি যখন একজন ইঞ্জিনিয়ারকে বা একজন আর্কিটেক্টকে বা একজন আর্মি অফিসারকে বা একজন ডাক্তারকে বা ভার্সিটির অনার্সে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হওয়া একটা মেয়েকে কিংবা ভবিষ্যতে নিজের একটা পরিচয় হোক তা চায় এমন কোন মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠান তাহলে মেনে নিতে হবে যে সে রোজ আপনার অপেক্ষায় থাকবে না। থাকলেও নিজের সুবিধা মত থাকবে । আপনি নিজের পায়ে দাড়ানোর জন্য যা যা করেছেন,সে ও করেছে।তাহলে দিন শেষে সে একা কেন সংসার সামলাবে?
আপনি যদি ভাবেন যে এতে সংসার ছারখার হয়ে যাবে তো আপনার উচিত এমন কাউকে বিয়ে করা যার ভবিষ্যতের চিন্তা সংসার কেন্দ্রিক। অফিসের ফাইল সামলানো বা নতুন প্রজেক্ট এর এসাইনমেন্ট নেবার চেয়ে যে রান্না করতে বা ঘর সাজাতে বেশি ভালবাসে।
হতে পারে আপনি ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার।আপনি প্রতিষ্ঠিত বলেই জীবনসঙ্গিনী উচ্চশিক্ষিত হোক তাই চান। কিন্তু কেন?
শুনতে ভালো শোনাবে তাই?লোকের কাছে বুক ফুলিয়ে বলতে পারবেন ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার বিয়ে করেছি?

নাকি পারস্পরিক বোঝাপড়ায় দু'জন মিলে সামনে এগুবেন তাই?
যদি শুনতে ভালো শোনাবে বলে হয় তাহলে আপনার উচিত না একজন বাবা, একজন মা, একটি পরিবার ও অনেক শিক্ষকের স্বপ্নকে আপনার ইগোর কাছে মাথা নোয়াতে বাধ্য করা।
আপনার কোন অধিকার নেই চার বছর ধরে যে মেয়েটা ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার বা বড় কর্মকর্তা হবার আশা নিয়ে দিনের পর দিন কস্ট করে গেছে, তিন কবুলের জোরে তার সেই স্বপ্ন গুলোকে চার দেয়ালে বন্দী করে দেবার।
আপনার যেমন চাই তেমন খুঁজুন।
স্টেথোস্কোপের দোকানে গিয়ে কোরিয়ান রামেনের প্যাকেট চাইলে তো হবে না।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url