"রায়হান এসে পড়েছে আগের আস্তানায়, এখন রাজিবের জন্য অপেক্ষা করছে। রাজিব মেয়েদের নিয়ে আসলেই, আগে তিশাকে বাড়িতে পৌঁছে দিতে হবে। তারপর মনে মনে যে চিন্তা করে এসেছে তা বাস্তবায়িত করতে হবে। আমার মেয়েকে কিডন্যাপ করার মজা আজকে হাড়ে হাড়ে টের পাবেন আপনি ম্যাডাম।কি বলেছিলেন আমি যদি মেয়ে দিতে না পারি তাহলে আমাকে পথে নামিয়ে সারবেন। আবার পুলিশের কাছে ও দিবেন, তাই না!
এখন দেখবো কে কাকে পথে নামিয়ে ছাড়ে। আজকে একবার শুধু রাজিব এখানে মেয়ে গুলো কে নিয়ে আসুক। তারপর যা করার বাকিটা আমি করবো,, আপনি শুধু আপনার বরা ডুবির জন্য প্রস্তুথ হোন। এই ডেলিবারিটা কেন্সেল হলে,,আপনার যে কি পরিমান লস হবে, তা আমার থেকে কেও ভালো জানে না।ফরেনারের দের রোষানলে আপনাকে পড়তে হবেই, তখন কে আপনাকে মেয়ের ব্যবস্থা করে দিবে!আমি? তা আর হচ্ছে না। আমাকে দিয়ে এতোদিন নিজের লাভ করিয়ে,,এখন আমাকে বাঁশ দিচ্ছেন। একটা মেয়ের ব্যবস্থা করতে পারিনি বলে, আমার অসুস্থ মেয়েটাকে লোক দিয়ে কিডন্যাপ করিয়েছেন,আবার হাত-পা বেঁধে তাকে ফেলে রেখেছেন। তার শাস্তি তো আপনাকে পেতেই হবে!
আমিতো নিজের সহধর্মিণীকেই ছাড় দেই না,আমার সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করলে। আর আপনি আবার কোন ক্ষেতের মুলা।আমার একটাই আফসোস আপনাকে সরাসরি কখনো দেখিনি, যদি আপনার চেহারাটা দেখতাম। তাহলে আপনাকে বুঝিয়ে দিতাম রায়হান চৌধুরীর রক্তে হাত দেওয়ার ভয়াবহতা। এখন আপনার সরাসরি তো আর কোনো ক্ষতি করতে পারবো না,,তাই আপনার ফিনানশিয়ালি ক্ষতি করে দিলাম। যাকে বলে টিট ফর টেট। আমি আবার কাওকে ঋনি রাখি না, আমার ক্ষতি করতে চাইলে,সে আমার যে-ই হোক না কোনো তার ক্ষতি করতে আমি দুইবার ভাবি না। এতো বড়ো লস হলে নিশ্চয়ই আপনি চুপ করে থাকবেন না! আমার সামনে এইবারতো আপনাকে আসতেই হবে। আসতেই হবে,,, ম্যাডাম,,, আসতেই হবে,,,,,,, মনে মনে কথা গুলো বলে পৈশাচিক হাসি হাসছে রায়হান।
এরি মধ্যে রাজিব মেয়েদেরকে নিয়ে মালবাহী ট্রাক করে আগের আস্তানার সামনে চলে এসেছে। রাজিবের সাথে আরও কয়েকজন ছেলে আছে , রাস্তায় অবশ্য আসার সময় একবার পুলিশ চেকিং পরেছিলো।রাজিব পুলিশকে মিথ্যা বলে, কোনো ভাবে ওখান থেকে চলে এসেছে। এখানে আসার সাথে সাথেই রায়হান কে কল করতে শুরু করে। প্রথম বার কল না উঠালেও দ্বিতীয় বার কল দিতেই রায়হান সাথে সাথে কল ওঠায়।
__হ্যালো স্যার,,, আপনি কোথায়! আমরা তো পুরনো আস্তানায় চলে এসেছি মেয়েদের কে সাথে নিয়ে। এখানে তো বাহির থেকে গেইট লাগানো। আমারা ভিতরে ঢুকবো কি করে! এখানে বেশিক্ষন দাড়িয়ে থাকলে, আবার সমস্যা হতে পারে।
__ও্ ,,,,,,, তুৃমি চলে এসেছো! আচ্ছা একটু অপেক্ষা করো আমি গেইট খুলছি।বলেই রায়হান কলটি কেটে দেয়।
ওদের আগের আস্তানাটা একটা বন্ধ পুরনো ফ্যাক্টুররি,অনেক বছর আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাই এই ফ্যাক্টরির মালিকের কাছ থেকে এটা কিনে নিয়েছে। রায়হান সময় নষ্ট না করে গেইট খুলে দেয়। তারপর রাজিব মালবাহী ট্রাক নিয়ে একদম ফ্যাক্টুরির ভিতরে ঢুকে পড়ে।তারপর আবার ভিতর থেকে গেইট বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাজিব গাড়ি থেকে নেমে রায়হানের সামনে আসে,,,,
__স্যার,, মেয়েগুলো কে নিয়ে এসেছে। এখন কি করবেন, ম্যাডাম জানতে পারলে কিন্তু আমার সর্বনাশ হয়ে যাবে ।
__নিয়ে এসেছে!আচ্ছা এখন মেয়ে গুলোকে গাড়ি থেকে নামিয়ে ছেলেগুলো কে গাড়ি নি আবার চলে যেতে বলো।
__গাড়ি নিয়ে চলে যাবে কেনো স্যার!তাহলে মেয়ে গুলো কে আবার কি করে নিয়ে যাবো।
__তোমাকে যা বলছি তুমি তা-ই করো! বেশি চিন্তা তোমাকে করতে হবে না।
__কিন্তু স্যার ম্যাডাম কে আমি কি জবাব দিবো!এমনিতেই ম্যাডাম কে না জানিয়ে এখানে এসেছি, এখন যদি ম্যাডাম জানতে পারে তাহলে তো প্রবলেম হয়ে যাবে।
__তুই এতো কথা বলছিস কেনো! তোর কি একটুও জানের মায়া নেই! না নিজের বউ বাচ্ছার জন্য মায়া নেই। আচ্ছা তুই যাস না,, আমার লোক গিয়ে তোর বউ বাচ্ছাদের মেরে দিক।কি বলিস তুই! আর এখানে আমি তোকে মেরে দিবো।
__আমি জানতাম স্যার আপনি এরকম একটা কিছু করতে পারেন তাই আমি ম্যাডাম কে জানাতে চাইছিলাম, কিন্তু ম্যাডামের মুবাইল বন্ধ থাকায় কল করতে পারি নাই। সমস্যা নেই স্যার আপনার ব্যবস্থা করতে আমি এই ছেলেগুলোকে সাথে নিয়ে এসেছি। এখন আপনি যদি আমার বউ বাচ্ছার কোনে ক্ষতি করতে চেষ্টা ও করেন তাহলে,, আমি আপনাকে এখানেই শেষ করে দিবো।
(কথা গুলো বলেই ছেলে গুলো কে গাড়ি থেকে নামতে ডাক দেয় রাজিব) এই কোথায় তোরা তাড়াতাড়ি এখানে এসে এই বুড়ো কে ধর।
রাজিব বলার সাথে সাথে ছেলেরা গাড়ি থেকে নেমে রায়হানের সামনে আসে। আর রায়হান রাজিবের কথা শুনার পর পৈশাচিক হাসি হাসতে হাসতে বলে,,,,
__অনেক বড়ো হয়ে গিয়েছো!তাই না।আমার মাধ্যমে এই লাইনে এসে আমাকেই পথ থেকে সরিয়ে দিতে চাইছো। কিন্তু তুমি এখনো এই মরন খেলায় বাচ্চা। অনেক কিছু এখনো তোমার শিখার বাকি আছে।
__আর কিছু বাকি নেই! আজকেই আপনার শেষ সময়, এখন মৃত্যুর প্রহর গুনতে শুরু করেন।
__আজকে আমার না তোমার শেষ সময় তা এখনই বুঝতে পারবে।আর এই ছেলে গুলো দিয়ে আমাকে মারবে! হা -হা,,,,, তুমি হয়তো জানো না, এই রায়হান চৌধুরী কি জিনিস। যদি জানতে তাহলে এই ভুল কখনে করতে না। কিন্তু আপসোস এখন বলে আর কোনো লাভ নেই!আজকেই তোমাকে মরতে হবে। এতখনে মনে হয় পুলিশ চলে এসেছে।এখন তোমাদের সবাই কে পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে আমি ভালো মানুষ সেজে যাবো।
রায়হানের মুখে পুলিশের কথা শুনতেই, রাজিবের সাথে আসা ছেলেগুলো একমুহূর্ত দেরি না করে, গেইট খুলে পালিয়ে যায়। রাজিব ও তাদের সাথে পালাতে নেয় তখনই, রায়হান নিজের পা বাড়িয়ে রাকিব কে নিচে ফেলে দেয়। নিচে পরার কারনে রাজিবের ঠুট কেটে রক্ত পরছে। রায়হান গিয়ে আবার গেইট বন্ধ করে আসে। আর মনে মনে ভাবে এরা কতটা বোকা!শুধু পুলিশের নাম নিয়েছে, আর সাথে সাথে সবগুলো পালাতে শুরু করে। একবার দেখলো না আসলেই কি পুলিশ আসছে! নাকি না।যাক এই মিথ্যা বলটা কাজে দিয়েছে। রায়হান আবার রাজিবের কাছে আসে,,,
__স্যার আমার ভুল হয়ে গিয়েছে আমাকে আপনি মাফ করে দেন। আপনি যা বলবেন আমি তা-ই করবো, প্লিজ আপনি আমাকে মারবেন না। আমার কিছু হলে আমার বাচ্চাদের দেখার মতো কেও নেই।
__এখন ক্ষমা চাইলেতো আর লাভ হবে না রাজিব, প্রথমে ভেবে নিতে হয় যে আমি কার সাথে লাগছি! আমি তার সাথে মাইন্ড গেম খেলে পারবো কি না। কিন্তু, না তুমি তোমার ম্যাডামের কথা শুনে আমার ক্ষতি করতে চেষ্টা করলে। এখন এর শাস্তি তোমাকে পেতে হবেই।
__স্যার প্লিজ আপনি আমাকে মারবেন না! আপনি যা বলবেন আমি তা-ই করবো। আপনার সব কথা শুনবো, তা-ও আপনি আমাকে মারবেন না প্লিজ।
এইতো বাছা পথে আসো,এতখন ধরে তো এই কথাটা শুনবার জন্য অপেক্ষায় ছিলাম। এখন যে করে হোক তোমার থেকে ম্যাডামের নাম্বার বা ছবি দেখতে হবেই।
__যদি তোমার বউ বাচ্ছা, আর নিজেকে বাঁচাতে চাও, তাহলে ম্যাডামের নাম্বার আর ছবি আমাকে দাও। তা না হলে এখনি তোমার শেষ সময়।
__স্যার আমার কাছে ম্যাডামের নাম্বার নেই, যেটা আছে ওইটা এখন আর ইউস করে না। ম্যাডাম আমাকে ভিন্ন ভিন্ন নাম্বারে কল দেয়। আর রইলো ম্যাডামের ছিবি! এইটা আমি দিতে পারবো না, তাহলে আমার বড়ো ক্ষতি করে দিবে।
__নিজের জীবনের থেকে তোমার কাছে ম্যাডামের ছবি বড়ো হয়ে গিয়েছে তাই না! তাহলে তুমি মরো।
কথাটা বলেই রায়হান রাজিবের গলায় রশি পেচিয়ে ধরে। রশি দিয়ে গলা পেচিয়ে ধরতেই, রাজিব ছটফট করতে শুরু করে। বাঁচার জন্য রায়হানের হাতে, খামচে ধরে। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয় না, রায়হান আরো জুড়ে রশি পেচিয়ে টান দেয়। রাজিব ছটফট করতে করতে মারা যায়। রাজিবের নরা-চড়া বন্ধ হয়ে যায়।রাজিব আর এই দুনিয়াতে নেই, এটা বুঝতেই রায়হান গলার মধ্যে পেচিয়ে রাখা রশি সরিয়ে ফেলে। তারপর রাজিবের পকেট থেকে ফোনটা বের করে অন করে।
যাক ভালোই হয়েছে ফোনটিতে লক দেওয়া নেই। তারপর রায়হান গ্যালাড়িতে প্রবেশ করে। একে একে সব ছবি দেখতে দেখতে নিচে একটা ছবি দেখার সাথে সাথে রায়হানের মুখের ভাব পরিবর্তন হয়ে যায়।সে যেনো অবাকের চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এটা কি করে সম্ভব! ও কি করে আমাদের ম্যাডাম হতে পারে,,,,,,,,,,,,,